বুদ্ধিবৃত্তিক চৌর্যবৃত্তি ৭

 

সেইন্ট টমাস অ্যাকুইনাসের সারা জীবনই গিয়েছে ইবন সিনা, আবু হামিদ আল-গাযালী আর ইবন রুশদের চিন্তাভাবনা নিয়ে ঘাটাঘাটি করে।[i] ইসলামী জীবন ও চিন্তাধারার সাথে অতিরিক্ত সম্পৃক্ততার কারণে, উইল ডুর‍্যান্ট বলেন[ii],

ইউরোপ যদি অ্যারিস্টটলের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞও থাকতো, তবু টমাস অ্যাকুইনাসের মত সেরা চিন্তক উৎপন্ন হত। অ্যাকুইনাসের মত মাস্টারমাইন্ড অ্যারিস্টটলের জন্য তৈরি হয়নি, হয়েছে ইবন রুশ্‌দের কারণে

 

অ্যাকুইনাসের উপর ইবন সিনার প্রভাব পড়েছে কেবল কসমোলজি, সাইকোলজি ও থিওলজির ক্ষেত্রে। আর আল-ফারাবীর প্রভাব? সেটা দেখা যায় প্রতিটা বিষয়ে। অ্যাকুইনাসের ন্যাচারাল থিওলজির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ principle of causality আর ঈশ্বরের অস্তিত্বের জন্য কসমোলজিকাল প্রমাণসমূহের ক্ষেত্রে অ্যাকুইনাস যা করেছেন, তা স্রেফ আল-ফারাবীর লেখার রিপিটেশান।[iii] অথচ, আল-ফারাবীর নাম তিনি নেননি।

 

রেভারেন্ড হ্যামন্ড আর ই. এ. মায়ার্‌স দেখিয়েছেন, কিভাবে আল-ফারাবী থেকে কার্বন কপি করেছেন টমাস অ্যাকুইনাস।[iv] এখানে কেবল একটা বিষয়ের মিলকরণ হবে। আরও অধিক মিল দেখার জন্য হ্যামন্ডের বই[v] দ্রষ্টব্য। আল-ফারাবীর কাজ অ্যাকুইনাসের সময় ও জায়গায় অ্যাভেইলেবল ছিল সেটা সুনিশ্চিত।[vi]

 

আল-ফারাবীঃ পরিবর্তনশীল মহাবিশ্বের প্রতি যদি গভির মনোযোগ দেওয়া হয়, দেখা যাবে এটি এমন সব জিনিস দিয়ে তৈরি যার (অস্তিত্বের) কোন না কোন কারণ আছে, আর এই কারণ আবার, অন্য কোন বস্তুর (অস্তিত্বের) কারণ। এখন, সক্রিয় কারণসমূহের ধারায় অসীমতা পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব না। কেননা, যদি খ এর (অস্তিত্বের) কারণ ক হয়, তবে গ এর (অস্তিত্বের) কারণ খ, ঘ এর  জন্য গ আর এভাবে যদি এগোতে থাকে, একসময় ক কারণ ক নিজেই হয়ে যাবে, যা সম্ভব না। সুতরাং অসীমধারার বাইরেও একটি সক্রিয় কারণ থাকতে হবে, যা হল ঈশ্বর।[vii]

 

সেইন্ট টমাসঃ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিশ্বে আমরা দেখতে পাই যে (অস্তিত্বের) সক্রিয় কারণসমূহের একটি অর্ডার আছে। এমন কোন ঘটনা জানা নেই (আর থাকা সম্ভবও না), যেখানে কোন বস্তু নিজেই নিজের (অস্তিত্বের) সক্রিয় কারণ…এখন, (অস্তিত্বের) সক্রিয় কারণসমূহের ক্ষেত্রে অসীমধারায় যাওয়া সম্ভব না…সুতরাং, প্রথম (অস্তিত্বের) সক্রিয় কারণকে স্বীকার করা বাধ্যতামূলক, যার নাম সকলে দেয়ঃ ঈশ্বর।[viii]

 

#বুদ্ধিবৃত্তিক_চৌর্যবৃত্তি

 



[i] S. E. al-Djazairi, The Hidden Debt to Islamic Civilization (MSBN Books, 2018)

[ii] Will Durant,  The Age of Faith (New York: Simon and Shuster, 6th printing, 1950) p. 954

[iii] S. E. al-Djazairi, The Hidden Debt to Islamic Civilization (MSBN Books, 2018)

[iv] E.A. Myers, Arabic Thought and the Western World (New York: Frederick Ungar Publishing, 1964)

[v] R. Hammond, The Philosophy of al-Farabi and its Influence on Medieval Thought (New York: The Hobson Book Press, 1947)

[vi] Charles Burnett. “Arabic into Latin: the reception of Arabic philosophy into Western Europe” in Peter Adamson and Richard C. Taylor (edt) The Cambridge Companion to Arabic Philosophy (Cambridge University Press, 2005) p. 393

[vii] Al Farabi, The Jami (Collections) (Cairo: Saadeh Press, 1907) pp. 115-25 as cited in al-Djazairi op. cit.

[viii] Thomas Aquinas, Summa Theologia (Tr. Fathers of the English Dominican Province; London: Burns, Oates and Washbourne, 1911) part 1, quest 3, p. 25


Post a Comment

0 Comments