বুদ্ধিবৃত্তিক
চৌর্যবৃত্তি
Muslim
Ingenuity, European Theft
পর্ব – ১
পরীক্ষামূলক
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি
ইবন আল-হায়সাম –
রজার বেকন
প্রচলিত যেকোনো বিজ্ঞানের ইতিহাসের বই (বাংলা, ইংরেজি
উভয়ই) নিলে দেখা যায় যে রজার বেকন Experimental Scientific Method এর প্রবক্তা। প্রতিষ্ঠাতা গ্যালিলিও, দেকার্ত আর ফ্রান্সিস বেকন। এর এক
সাধারণ উদাহরণ আমদের দেশের এক সময়কার ফিজিক্স পাঠ্যবই।[i] কিন্তু জিনিসটা প্রথম
পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্র্যাক্টিস করেন ইবন আল-হাইসাম এবং তিনিই এর জনক।[ii]
রজার বেকন সর্বপ্রথম এটি ইউরোপে আনেন, ইতিহাসে না। তারপর আবার
তার এটার উপর নিজের প্র্যাকটিস রঙ চড়িয়ে বলা হয়েছে।[iii] এর আগে অবশ্য অনেক
গ্রিক এ ব্যাপারে জানত, তবে তারা তা প্র্যাকটিস করত না। নিজের মত কীভাবে প্রমাণ করতে হবে, সবাই সেটা নিয়েই ব্যস্ত ছিল। রজার
বেকন মুসলিমদের থেকে বিশেষ করে ইবন আল-হাইসাম থেকে বিশাল ভাবে অনুপ্রাণিত। এমনকি
তার সেরা কাজ, opus majus এর ৫ম চ্যাপ্টার ইবন
আল-হাইসাম এর কিতাব আল-মানাযির থেকে
একেবারে কপি করা।[iv] আবার
রজার বেকন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির কৃতিত্ব ইবন আল-হাইসামকে না দিয়ে দিয়েছেন পিটার
পেরেগ্রিনাসকে। এর অবশ্য কারণ ছিল। ইবন আল-হাইসামকে কৃতিত্ব দিলে খৃষ্টান সমাজে
গ্রহণযোগ্যতা হারানোর সম্ভাবনা ছিল।[v] রজার
বেকনের চরিত্রে বেশি একটা দোষ পরিদৃষ্ট না। আরবি
আর আরবি বিজ্ঞানের জ্ঞানকে তো তিনি সত্য জ্ঞানের একমাত্র পথ বলে মেনেই নিয়েছেন।[vi]
আবার কিছু ‘উন্নত’ বইয়ে দেখা যায় যে ইবন আল-হাইসাম
প্রবক্তা, রজার বেকন ট্র্যান্সমিটার আর প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে গ্যালিলিও, দেকার্ত আর
ফ্রান্সিস বেকন।
দেকার্ত আর ফ্রান্সিস বেকন ১৭শ শতাব্দীতে যা বলেন, ইবন
আল-হাইসাম তা আরও অনেক আগেই করে দিয়ে গিয়েছিলেন। ইবন আল-হাইসামের বৈজ্ঞানিক
পদ্ধতি, যেখানে তিনি অত্যন্ত গভির ও সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন, যে প্রক্রিয়ায়
তিনি গবেষণা করতেন, তা সন্দেহাতীতভাবে আধুনিক পরীক্ষামূলক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রথম
চিহ্ন এবং পরবর্তীতে গ্যালিলিও, দেকার্ত আর ফ্রান্সিস বেকন যা প্রতিষ্ঠা করেন
তা-ই। এজন্য, বিভিন্ন স্কলার মত প্রকাশ করেছেন যে ইবন আল-হাইসামের ‘বৈজ্ঞানিক
পদ্ধতির জনক’ খেতাব পাওয়ার অধিকার বেশি।[vii]
সামগ্রিক ক্রেডিট দিতে হলে অবশ্য ইবন আল-হাইসাম এর সাথে
আবু বকর আল-রাযী ও আবু রাইহান আল-বিরুণীর নাম নিতে হয়।
Whosoever studies
works of science must, if he wants to find the truth,
transform himself into a critic of everything he reads
References:
[ii] Steffens,
Bradley. Ibn Al-Haytham: First Scientist. Greensboro, NC: Morgan Reynolds,
2007. ; al-Khalili, Jim. Pathfinders.
Allen Lane, 2010
[iii] Kara
Rogers (edt), The 100 Most Influential Scientists of All Time (Britannica Educational Publishing, First
Edition 2010) p: 38
[iv]
কিংস্টোনের কুইন্স লাইব্রেরিতে পাণ্ডুলিপিটি পাওয়া যায়। ক্যানাডার
জাকারিয়া ভির্ক বিষয়টি খতিয়ে দেখেছেন।
[v] রাফান
আহমেদ, অবিশ্বাসী
কাঠগড়ায় : হুমায়ুন আজাদের ‘আমার
অবিশ্বাস’ গ্রন্থের
অপনোদন (সমর্পণ প্রকাশন, একুশে বইমেলা ২০১৯) p: 193
0 Comments